অনেক জায়গায় লেখা আছে যে পেপের পাতা রস করে খেলে ডেঙ্গু সেরে যায় এটা কতটুকু সত্য আমরা জানি না তবে বিশেষজ্ঞরা বলেছে যে এটি একটি গুজব। অনেক অনলাইন নিউজ এইগুলোর লেখা আছে তা নিচে দেওয়া হল।
ডেঙ্গু বর্তমানে মহামারি ধারণ করেছে। এ বছর দেখা যাচ্ছে ডেঙ্গুর লক্ষণ অন্য রকম, ডেঙ্গু জ্বরের স্বাভাবিক যেসব লক্ষণ থাকে, সেগুলো এ বছর অনেক রোগীর মাঝেই পাওয়া যাচ্ছে না। সাধারণত ডেঙ্গু জ্বর হলে রোগীর প্রচণ্ড জ্বর (১০৩ থেকে ১০৬ ডিগ্রি), শরীর এবং গিরায় গিরায় ব্যথা, যাকে বলে হাড়ভাঙা জ্বর বা ব্রেকবোন ফিভার, চার থেকে পাঁচ দিন পরে জ্বর কমে যায় এবং গায়ে র্যাশ ওঠে।
এই সময় জ্বর কমে যাওয়ার পরপরই রক্তের প্লাটিলেট কমে যায় ও রক্তরক্ষণের ঝুঁকি থাকে। আর বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বরের ধরন পালটে যাওয়ার কারণে দেখা যায়, জ্বর অল্প অল্প থাকে, শরীরে তেমন ব্যথাও হয় না, এমনকি অধিকাংশ রোগীর গায়ে র্যাশও হচ্ছে না। আবার এমনও দেখা যায়, জ্বর হওয়ার দুই থেকে তিন দিন পরই প্লাটিলেট কমে যাচ্ছে, আর এতে রক্তক্ষরণের ঝুঁকিও বেড়ে যাচ্ছে। এ কারণে রোগীরা বুঝে উঠার আগেই প্লাটিলেট কমে রক্তক্ষরণ এবং ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন।
ডেঙ্গু নিরাময়ে পেঁপে পাতার গবেষণা
ডেঙ্গু কারণে রক্তের প্লাটিলেটগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় অর্থাৎ প্লাটিলেটের সংখ্যা কমে যায়। ২০১১ সালে পাবমেড(PubMed) জার্নালে প্রকাশিত (Asian Pac J Trop Biomed, 2011 Aug) গবেষণায় উল্লেখ করা হয় যে পেঁপে পাতার রসে প্লাটিলেট উৎপাদনে সাহায্যকারী উপাদান রয়েছে। পেঁপে পাতায় থাকে প্রচুর পরিমানে কমপ্লেক্স ভিটামিন যা প্রচুর পরিমাণে প্লাটিলেটের উৎপাদনে সাহায্য করে। পাতার নির্যাস জীবানু বহনকারী মশার লার্ভা ধংস করে। রস সেবনে প্লাটিলেটের সংখ্যা প্রথম দিনেই বৃদ্ধি পেয়ে দ্বিগুন হয়ে যায় এবং ৫দিনেই প্লাটিলেটের সংখ্যা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে।পেঁপে পাতার রস সেবনে দেহে প্লাটিলেটের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পায় যা অল্পসময়ে দেহের ব্যথাও ফুলা ভাব নিরাময় করে।
ডেঙ্গু নিরাময়ের জন্য পেঁপে পাতার রস কীভাবে তৈরি করবেন
১. পেঁপে পাতার রস বানানোর জন্য কচি পেঁপে পাতা ধুয়ে তা ছাড়িয়ে নিতে হবে শিরা থেকে।
২. তারপর তা পিষে রস বের করতে হবে।
৩. ২৫ মিলিলিটার বা ৫ চা চামুচ পাতার রস এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে প্রতিদিন দুই বেলা ( সকালে ও সন্ধ্যায়) দুই চামচ করে পান করতে হবে
এভাবে ৫ দিন খেতে হবে, এতে রোগীর আশানুরুপ উন্নতি না হয়, তবে পরবর্তী সপ্তাহ র্পযন্ত খেতে হবে।
সবশেষে
ডেঙ্গুর কোনো ভ্যাকসিন নেই। যেহেতু ডেঙ্গু ভাইরাস চার টাইপের, তাই এই চারটি ভাইরাসের প্রতিরোধে কাজ করে, এমন ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হয়নি। তাই ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধের মূলমন্ত্রই হলো—অ্যাডিস মশার বিস্তার রোধ এবং এই মশা যেন কামড়াতে না পারে, তার ব্যবস্থা করা। মনে রাখতে হবে এডিস মশা অভিজাত এলাকায় বড়ো বড়ো সুন্দর সুন্দর দালান কোঠায় এরা বাস করে। স্বচ্ছ পরিষ্কার পানিতে এই মশা ডিম পাড়ে। ময়লা, দুর্গন্ধযুক্ত ড্রেনের পানি এদের পছন্দসই নয়। তাই ডেঙ্গু প্রতিরোধে অ্যাডিস মশার ডিম পাড়ার উপযোগী স্থানগুলোকে পরিষ্কার রাখতে হবে এবং একইসঙ্গে মশক নিধনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এই রোগ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হলো—ব্যক্তিগত সতর্কতা এবং অ্যাডিস মশা প্রতিরোধ।
টাই ডেঙ্গু জ্বর হলে ভালো বিশেষজ্ঞদের দেখানো উচিত এই গুলো থেকে বিরত থাকার জন্য আমরা আপনাদের অনুরোধ রইল।