Sunday, December 10, 2017

বাংলাদেশের কৃষকের মরেও শান্তি নাই !

দেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ কি তা এ দেশে সব থেকে বেশী উপলদ্ধি করে এদেশের অসহায় কৃষককুল । এদের সহযোগিতার কোন সংস্থা নাই । এদেশে এদের এমন অবস্থা যে সব থেকে সমৃদ্ধশালী শিল্প তা হলো কৃষি শিল্প । তাদের ক্ষতিতে কারো কোন মাথা ব্যথার দরকার নেই । বরং তাদের রক্ত চোষার জন্য এই মরার উপর খাড়ার ঘাঁ দেওয়ার জন্য আরো বাড়ানো হয় কৃষি উপকরণের দাম।চরম সত্য কৃষক মরেও শান্তি পায় না ওর কবর হয় ঝোড় জঙ্গলে । ওর কবরে ওঠে পানি কাঁদা । ওর জন্য আনা হয় না কোন দামী ইটপাথর । সেখানে কেউ ভালো বাসতে চাই না

গত ইরি মৌসুমে হাজার হাজার হেক্টর জমির ধান প্রাকৃতিক দূর্যোগে নষ্ট হয়ে গেলো । হাওর অঞ্চলের অবস্থার বর্ণনার ভাষা আমার নেই ।
স্বয়ং সৃষ্টিকর্তাও যেন এই কৃষককূলকে আর সহ্য করতে পারছেন না ? তাদের কষ্টে পরিশ্রমে চাষ করা ফসল যখন ঘরে তোলার সময় আসছে ঠিক সেই মুহুর্তে দিচ্ছে প্রাকৃতিক দূর্যোগ । আর এক নিমিষেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে শত শত বিঘা হেক্টর এর ফসল ।
আজ সকালে বৃষ্টির মাঝে মাঠে গিয়ে মাথা ঘুরে পড়ার অবস্থা । চোখের পানি আটকে রাখতে পারিনি । দুদিনের এই বৃষ্টি আর বাতাসে সবেমাত্র ধানের ছড়া বের হচ্ছে এই ধানগাছ সব ভেঙে মাটিতে পড়ে গেছে । এই ধানে না হবে দানা না হবে গরুর খাদ্য খড় । মাথার ঘাম পায়ে ফেলে উচ্চমূল্যে সার কীটনাশক, বীজ কিনে এই ফসল ফলানো । আজ সেটাও আর ঘরে তুলতে পারবে না । কিন্তু সার ওষুধের দোকানে বাকী সেই দেনা ঠিকই আর এক মাস পর পরিশোধ করতে হবে কৃষকের হালের গরু অথবা চারপাশ কুড়িয়ে পাওয়া সামান্য ফসল সেই গুলো বিক্রি করে। তবুও এই মহা বিজ্ঞানী কৃষককূল ফসল ফলানো বন্ধ করবে না । কারণ ওরা যে মহৎ, ধনী শ্রেণীর মুখের অন্য না যোগালে যে ওদের মনে শান্তি আসবে না । ওদের সকল ভালোবাসা এই ফসলকে ঘিরে । সারাদিন না খেয়ে রোদে পুড়ে যখন ফসলের জমির পাশে দাড়ায় সোনালী ধানের গন্ধে সবজি ক্ষেতের মনোরম পরিবেশে ওদের সকল পরিশ্রমের কথা যায় ভুলে । হাসিমুখে ফিরে ঘরে সন্ধ্যা নামলে।
বাংলাদেশ সরকারের কাছে বিনীত আবেদন , এই দেশে কত ধরণের বীমা চালু রেখেছেন যা অধিকাংশ ধনী শ্রেনীর উপকারর্থে । শুধু এই কৃষকের মুখের পানে তাকিয়ে কৃষি বীমাটি সারা দেশ ব্যাপী চালু করুন । এবং এই বীমাটি কৃষি অনুকূলে যেন হয় ধনীশ্রেণীর মুনাফা অর্জনের হাতিয়ার করে না । তাহলে এই কৃষক সমাজ প্রাকৃতিক দূর্যোগে নষ্ট হওয়া ফসলের ক্ষতিপূরণ যতটুকু পাবে সেটা দিয়ে পরবর্তী চাষ আবার শুরু করতে পারবে। সেই সাথে কীটনাশক ,সার , বীজের দামটি কৃষকের অনূকুলে রাখুন । তাহলে খাদ্য ঘাটতি পুরণে অন্যর দারস্থ হতে হবে না এই বাঙালিদের।

শেয়ার করুন

0 comments: